শাহাদাৎ হোসেন ইমরান : রাজধানির তুরাগে বৃহস্পতিবার বাউনিয়া উলুদাহায় মেট্রোরেলের চোরাই মালামাল ও ড্রাম ট্রাকসহ নৌজা নামের ১ ব্যাক্তিকে আটক করে পুলিশ। এসময় পালিয়ে যায় আরো ৪ জন। পালিয়ে যাওয়া চারজন হলেন ওয়াদুদ,নূরনবী,সবুর ও বিল্লাল। পরবর্তীতে নতুন করে ৮ জনকে আটক দেখায় পুলিশ।
তারা হলেন,হাশেম রহমান ওরফে জাকির(২৭),মোঃ শফি(১৫),কামরুজ্জামান ওরফে পারভেজ (২৪),সুজন মিয়া(২৬),জলিল মিয়া (২৭),আলামিন (২২),সেলিম হোসেন(২২),রফিকুল(২৫)।
একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় , এ ঘটনায় দেন দরবারে পর ৩১হাজার টাকার বিনিময়ে চোরাইকৃত মালামাল সহ আটককৃতদের ছেড়ে দেন তুরাগ থানার এএসআই রতন এবং এএসআই রহিম।
বিষয়টি উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলামকে জানানো হলে নড়ে চড়ে বসে তুরাগ থানা পুলিশ।
পরবর্তীতে ঘটনার দিন বিকেলে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান এএসআই আনোয়ারুলকে পাঠিয়ে নতুন করে ৮ জনকে গ্রেফতার করে চোরাই মালামাল ও ড্রাম ট্রাক সহ থানায় নিয়ে আসে। যাদের মধ্যে প্রথমে আটক হওয়া মুল হোতা নৌজা পালিয়ে যাওয়া চারজনের এক জনও নেই। তাছাড়া চোরাই মালামাল ক্রয়ের মুল হোতা দেলোয়ারের নামও ছিলো না এই ৮ জনের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তুরাগের ১৭ নাম্বার সেক্টরের খেলার মাঠের পাশে উলুদাহা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নিউজবিডি৭১ এর প্রতিবেদককে স্হানীয়রা জানায়,সকালে মেট্রোরেলের চোরাই করা লোহার অংশ নিয়ে যাওয়ার পথে এএস আই রহিম ট্রাকটিকে থামাতে বললে চার জন পালিয়ে গেলেও নৌজা নামের এক ব্যাক্তিকে আটক করে পুলিশ। একটু পরেই এএসআই রতন ঘটনাস্থলে পৌঁছালে প্রায় তিন ঘন্টা আলোচনা করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নৌজাকে ছেড়ে দেয়। মেট্রোরেল চোরাইকৃত মালামাল সম্পর্কে আরো জানা যায়, মেট্রোরেলের চোরাই মালামাল সহ ধরে এর আগেও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে তুরাগ থানা পুলিশ।
প্রতিবেদককে প্রথমে আটক হওয়া নৌজা জানায়, মালামালগুলো নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ দেখে ওয়াদুদ,নূরনবী,সবুর ও বিল্লাল পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভাঙারী দেলোয়ার এসে টাকার বিনিময়ে আমাকে সহ আটককৃত মালামাল ছাড়িয়ে নিয়ে যায় পুলিশের কাছ থেকে।
এ বিষয়ে এএসআই রহিমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া না গেলে তার সাথে থাকা এএস আই রতনের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ঘটনাটি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বলেন, এ ঘটনায় ৮ জন আটক আছে। আপনারা ওসি সাহেবের সাথে কথা বলেন। আমি কিছু জানি না বলেই তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
নতুন করে ৮ জনকে আটক দেখানোর ঘটনাটি জানতে এএসআই আনোয়ারুলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না ভাই। ওসি সাহেব ভালো বলতে পারবেন। এই বিষয়ে কথা বলা আমার নিষেধ আছে।
এসময় থানার বাহিরে আটককৃত মালামাল ও ড্রাম ট্রাকের ছবি তুলতে গেলে প্রতিবেদককে বাধা দেন এক পুলিশ সদস্য।
পরবর্তীতে ডিউটি অফিসারের কাছ থেকে ৮ জনের নাম সংগ্রহ করে খোঁজা হয় তাদের পরিবারকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আটককৃত এক ব্যাক্তির ভাই জানান, পুলিশ কেনো ধরে নিয়ে আসছে জানি না। এই চুরির সাথে আমার ভাই কোনো ভাবেই জড়িত নয়।
এ বিষয়ে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান জানান, মেট্রোরেলের চোরাইকৃত মালামালসহ ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এই ৮ জন কারা আর প্রথমে যাদেরকে আটক করা হয়েছিলো তাদেরকে টাকার ছেড়ে দেয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান এড়িয়ে যান।
উত্তরা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, চুরির ঘটনায় ৯ জনকে আটক করা হয়, একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।তিনি আরো বলেন, চুরির ঘটনার সাথে আরো ১৬-১৭ জনের নাম আছে তাদেরকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে ।টাকার বিনিময়ে আসামি ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান ।
এম কে
