মোঃ সাজেদুর রহমান
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শ্রমিকদের ছাটাইয়ের প্রতিবাদে ও বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে একই মালিকানাধীন ৩টি পোশাক কারখানার কয়েক’শ শ্রমিক। মঙ্গলবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলস্থ এ.কে ফ্যাশন, আহসান গ্রুপ এবং এ্যাপরেলস লিঃ এর শ্রমিকরা এ বিক্ষোভ করে। গার্মেন্ট ৩টির মালিক ইঞ্জিনিয়ার কামরুল আহসান। শ্রমিকদের বিক্ষোভ চলাকালীন দুপুরে ৩টি কারখানা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন মালিক পক্ষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান নেয়।
জানা যায়, লকডাউনের সময় গার্মেন্ট লেঅফ ছিল। পরবর্তীতে গার্মেন্টের নতুন কোন কার্য্যাদেশ না থাকায় সীমিত আকারে গার্মেন্ট চালু করা হয়। লকডাউনের সময় এবং কারখানা চালু করার পরও যে সকল শ্রমিক কর্মচারী কাজে যোগদান করেনি তাদের বেসিক ৬০% হারে মালিক পক্ষ দিয়ে আসছে। গার্মেন্ট পুরোপুরি চালু না হওয়ায় ৩০০ শ্রমিক কর্মচারী কাজে যোগদান করতে পারেনি। তবে গার্মেন্টের ইউনিট পুরোপুরি চালু হলে পর্যায়ক্রমে সকল শ্রমিক কর্মচারীকে কাজে পূর্নবহালের ঘোষণা দিয়েছে মালিক পক্ষ। কিন্তু কতিপয় উছৃঙ্খল শ্রমিকের ইন্ধন যারা কাজে যোগদান করেনি তাদেরকে ছাঁটাই করা হবে এ খবর ছড়িয়ে দেয় সাধারন শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ৩ টি গার্মেন্টর ২২’শ শ্রমিকদের মধ্যে ১৯’শ শ্রমিক কর্মচারী কাজে যোগদান করে। কিন্তু উছৃঙ্খল শ্রমিকরা আহসান এ্যাপারেলস এর সামনে জড়ো হয়ে গার্মেন্টের পরিচালক আব্দুর রাজ্জাককে গামেন্টের সামনে পেয়ে বেধড়ক মারধর করে মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় উপস্থিত শিল্প পুলিশের কয়েক সদস্য দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখলেও তারা তাকে শ্রমিকদের রোষানল থেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা একই মালিকের অপর গার্মেন্ট এ কে ফ্যাশন এর সামনে গিয়ে ৩ নিরাপত্তা প্রহরীকে মারধর করে।
গার্মেন্টস পরিচালক রুবাইয়াত হোসাইন জানায়, ৩টি গার্মেন্টেই মার্চের পুরো বেতন দেয়া হয়েছে এপ্রিলের ৭ তারিখে। এপ্রিল মাসের ৮ তারিখে এপ্রিল মাসের লে-অফ বেসিক বেতন দিয়ে মে মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত গার্মেন্ট ৩টি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গার্মেন্টের কাজের অর্ডার না থাকায় সকল গার্মেন্ট না খুলে আংশিক গার্মেন্ট খোলা হয় মে মাসের ২ তারিখে। এতে কিছু শ্রমিক কাজে যোগদান করে। তবে মোবাইলের বিকাশের মাধ্যমে মে মাসের বেতনসহ সরকার ঘোষিত সকল পাওনাদি পরিশোধ করা হয়। কোন কাজের অর্ডার না থাকার পরেও হঠাৎ করে আজ গার্মেন্টের শ্রমিকরা গার্মেন্টে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খল আচার করতে উদ্যত হয়। কিন্তু শ্রমিকদেরকে গার্মেন্টে প্রবেশ করতে না দেয়ায় তারা বিক্ষোভ শুরু করে।
এদিকে বিক্ষুব্দ শ্রমিকদের পক্ষ হয়ে আব্দুস সালাম জানায়, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের সম্পূর্ণ বোনাস পরিশোধ করা হয়নি। তার উপর আমাদের কিছু শ্রমিককে কাজে প্রবেশ করতে দিলেও সকাল থেকে অনেক শ্রমিককেই কারখানার ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তিনি আরো জানান, এমতাবস্থায় আমরা চাকুরী হারানোর ভয়ে আছি। আমরা আমাদের কর্মস্থলে ফিরতে চাই।
ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশ-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার আইনুল হক জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে মালিকপক্ষ কারখানা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। পরবর্তীতে তারা পরিস্থিতি বুঝে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেবে।
নিউজবিডি৭১/ এম কে /০২ জুন ২০২০