নিজস্ব প্রতিবেদক:বজ্রপাতে প্রাণহাণির ঘটনা বেড়েই চলেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিদিনই আসছে মৃত্যুর খবর। ২০২১ সালে মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত চার মাসে সারাদেশে বজ্রপাতে ১৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন অন্তত ৪৭ জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জামালাপুর, নেত্রকোণা ও চট্টগ্রামে বজ্রাঘাতে প্রাণহানি বেড়েছে। তবে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সিরাজগঞ্জ।
শুক্রবার (১১ জুন) সামাজিক সংগঠন ‘সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম-এসএসটিএএফ’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর পুরানা পল্টনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে জানানো হয়, , ২০২১ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত চার মাসে বজ্রপাতে ১৭৭ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছে ৪৭ জন। এর মধ্যে শুধু কৃষি কাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ১২২ জনের। বজ্রপাত ও কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন ১৫ জন। ঘরে অবস্থানকালীন বজ্রপাতে মারা গেছেন ১০ জন, নৌকায় মাছ ধরার সময় ছয় জন, মাঠে গরু আনতে গিয়ে পাঁচ জন, মাঠে খেলা করার সময় তিন জন ও বাড়ির আঙিনায়/উঠানে খেলা করার সময় ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, ভ্যান বা রিকশা চালানোর সময় দুই জন ও গাড়ির ভেতরে অবস্থানকালীন বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া ১৭৭ জনের মধ্যে ১৪৯ জন পুরুষ ও ২৮ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৩ শিশু ও নয় জন কিশোর-কিশোরী রয়েছেন।
জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজ ও টেলিভিশনের স্ক্রল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এসএসটিএএফ বজ্রপাতে হতাহতের এই পরিসংখ্যান করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে এসএসটিএএফ’।
সংবাদ সম্মেলনে বজ্রাঘাতে মৃত্যু কমাতে বেশ কিছু দাবি করা হয়। সেগুলো হলো-
১. বজ্রপাতের ১৫ মিনিট আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর জানতে পারে কোনো কোনো এলাকায় বজ্রপাত হবে। এটাকে মোবাইল মেসেজ আকারে সংশ্লিষ্ট এলাকার সব মানুষকে জানানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. ঝড়/জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রকৃতিক দুর্যোগে মানুষের মৃত্যুর হার যতটা তার চেয়ে অনেক বেশি মৃত্যুর হার বজ্রপাতে। তবে এটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘোষণা করলেও এ খাতে বরাদ্দ কম। মানুষের জীবন রক্ষার্থে এ খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
৩. মাঠে, হাওর, বাওরে বা ফাঁকা কৃষি কাজের এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে। যার ওপরে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করতে হবে। যেন বজ্রপাতের সময় কৃষকরা সেখানে আশ্রয় নিতে পারে।
৪. বিদেশ থেকে আমদানির ক্ষেত্রে থান্ডার প্রটেকশন সিস্টেমের সব পণ্যে শুল্ক মওকুফ করতে হবে।
৫. সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপনের ঘোষণা দিতে হবে।
৬. বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা/ থান্ডার প্রটেকশন সিস্টেম যুক্ত না থাকলে নতুন কোনো ভবনের নকশা অনুমোদন করা যাবে না।
এসএইচআই
