দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়লেও প্রতিবেশী ছোট দেশগুলোর ওপর কর্তৃত্ব না দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বেইজিং। আজ সোমবার চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের ১০ সদস্যদেশের নেতাকে এমন আশ্বাস দিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
আসিয়ান নেতাদের উদ্দেশে সি চিন পিং বলেন, চীন সব সময় আসিয়ানের ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু ও ভালো সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে। ভবিষ্যতেও সে ধারা বজায় থাকবে। তিনি দাবি করেন, চীন কখনো ছোট দেশগুলোর ওপর কর্তৃত্ব দেখাতে চায় না, তাদের কাছ থেকে ফায়দা আদায় করতে চায় না। বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপের প্রবণতা দূর করতে আসিয়ানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।বিজ্ঞাপনবিজ্ঞাপন
সম্মেলনে সি আরও দাবি করেন, চীন ও আসিয়ান জোট ‘স্নায়ুযুদ্ধের অন্ধকার দূর করেছে’। ভিয়েতনাম যুদ্ধের মতো বিভিন্ন সংঘাতে বিপর্যস্ত অঞ্চলটিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করেছে তারা।
আসিয়ানভুক্ত ১০ দেশ হলো ব্রুনেই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের সঙ্গে চীনের বিরোধ রয়েছে। এ ছাড়া ব্রুনেই, তাইওয়ান ও মালয়েশিয়াও দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু অংশের মালিকানা দাবি করে থাকে। আর এ নিয়ে চীনকে চাপ দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।
ফিলিপাইনের অভিযোগ, সম্প্রতি দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের কিছু নৌকা আটকে দিয়ে জলকামান নিক্ষেপ করেছে চীনের কোস্ট গার্ড। গত বৃহস্পতিবার এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে দেশটি।বিজ্ঞাপন
আর গত শুক্রবার চীনের কর্মকাণ্ডকে ‘বিপজ্জনক, উসকানিমূলক ও অন্যায্য’ বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অক্টোবরে এক ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে আসিয়ানের নেতাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সে সময় আসিয়ান অঞ্চলে সহযোগিতা আরও জোরালো করার আশ্বাস দেন তিনি।
আসিয়ান সম্মেলনে নেই মিয়ানমার
এদিকে মিয়ানমারের কোনো প্রতিনিধিকে ছাড়াই এ বছরের আসিয়ান সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনে মিয়ানমারের কোনো প্রতিনিধি কেন যোগ দেননি, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে জানতে মিয়ানমারের সেনা সরকারের মুখপাত্রকে ফোন করে সাড়া না পাওয়ার কথা জানিয়েছে রয়টার্স।
গত মাসে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল সম্মেলন থেকেও মিয়ানমারের জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইংকে বাদ রেখেছিল আসিয়ান। শান্তি পরিকল্পনা কার্যকর করতে ব্যর্থ হওয়ায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আসিয়ান সম্মেলন থেকে কাউকে বাদ রাখার এ ঘটনা নজিরবিহীন। মিন অং হ্লাইংকে বাদ দিয়ে কোনো জুনিয়র প্রতিনিধিকে পাঠাতে রাজি হয়নি মিয়ানমার। দেশটির অভিযোগ, হস্তক্ষেপ না করার নীতি থেকে সরে গেছে আসিয়ান, পশ্চিমা চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে এ জোট।
কূটনৈতিক সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিন অং হ্লাইং যেন আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে তদবির চালিয়েছিল চীন।